ডেইলিনিউসান রিপোর্টঃ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে এবং ২৫শে মার্চ কালোরাত্রি স্বরণে একটি অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্মেদ পলক, এমপি এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর সিনিয়র সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে নতুন প্রজন্মের মাঝে জাতীয় সংগীতকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে নতুন আয়োজনে নির্মিত জাতীয় সংগীতে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মের ৫০জন দেশের বিশিষ্ট গুণী ও তারকা শিল্পী কণ্ঠ দিয়েছেন। মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে (রাত ১২ টা ০১ মিনিটে) গানবাংলাসহ দেশের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও স্টেশনসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজনের এ জাতীয় সংগীত।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্মেদ পলক এমপি, বলেন, আমরা যদি মুক্তির গানগুলোকে আগামী দিনের সাংস্কৃতিক মুক্তির আন্দোলনকে সফল করার জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সুসম্পন্ন করতে পারি তাহলেই আমাদের স্বাথর্কতা। এতে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে। আমরা বিশ্বাস করি শুধুমাত্র প্রযুক্তি নয়, প্রযুক্তির সাথে সাথে প্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রযুক্তির সাথে প্রগতিকে সম্পৃক্ত করতে পারলে আমরা এ দেশটাকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত করতে পারবো। তিনি বলেন, আসুন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে সফল করতে আজকে আমরা শপথবদ্ধ হই। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এবং মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি সকলে মিলে প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক প্রজন্ম গড়তে আমরা সকলে মিলে সাংস্কৃতিক মুক্তির আন্দোলনকে সফল করার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীরা আমাদের নিরীহ মানুষদের উপর ইতিহাসের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীরা। বঙ্গবন্ধুর সেই সংগ্রামী বক্তব্য, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম উল্লেখ করে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধুমাত্র আমাদের স্বাধীনতাই নয়, আামদের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সাংস্কৃতিক মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা রাজনৈতিক মুক্তি হিসেবে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছিলাম। তার অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক মুক্তির অসমাপ্ত সংগ্রাম এখনও চলমান রয়েছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ শুভক্ষণে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক মুক্তি সংগ্রামকে পূর্ণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে মধ্যম আয়ের দেশ ও মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আমাদের এ অর্থনৈতিক মুক্তিকে টেকসই করতে হলে আমাদেরকে সাংস্কৃতিক মুক্তির সংগ্রামকে সফল করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে আইসিটি বিভাগ সময় সময়ে ম্যাজিক দেখায়। এই ম্যাজিকের মূল প্রেরণা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আইসিটি বিভাগ স্বাধীনতার চেতনাকে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এবং দেশপ্রেমকে জাগ্রত করতে সময় সময় এ ধরনের আয়োজন করে থাকে। আমাদের জাতীয় সঙ্গীত দেশপ্রেমকে উজ্জীবিত করে। মুক্তিযোদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের গান দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল। জাতীয় সংগীতের সাথে দেশপ্রেমের সংমিশ্রণে উপস্থাপনের মধ্যে দিয়ে উজ্জীবিত করার কাজটি অত্যন্ত কঠিন হলেও বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের মাঝে স্বাধীনতার চেতনা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ভবিষ্যতেও এ ধরনের কাজ করে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
উল্লেখ্য জাতীয় সংগীতের বৃহৎ এই আয়োজনে কণ্ঠ দেওয়া শিল্পীরা হলেন- রফিকুল আলম, খুরশীদ আলম, ফকির আলমগীর, মাহমুদ সেলিম, হামিন আহমেদ, মাকসুদ, হাসান, এস আই টুটুল, সুজিত মুস্তাফা, বালাম, রবি চৌধুরী, মিজান, অর্ণব, মিলন মাহমুদ, আরিফিন রুমি, রাফা, অদিত, পারভেজ, মুন, শামিম, প্রিয়, হাসিব, এবিডি, পুলক, শাহিন সামাদ, তাপস, ফাতেমা তুজ জোহরা, আবিদা সুলতানা, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, শামা রহমান, ফাহমিদা নবী, দিলশাদ নাহার কাকলী, আঁখি আলমগীর, মেহরিন, রুমানা ইসলাম, তাশফি, লুইপা, দোলা, রেশমি, আনিকা, সিঁথি সাহা, সুনিধি নায়েক, টিনা রাসেল, অনিমা রায়, ঐশি, এলিটা, জুলি, আর্নিক, পুতুল, আয়শা মৌসুমী।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গানটি দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে মাধুর্যমণ্ডিতরূপে তুলে ধরতে এটুআই-এর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট মিডিয়ার তত্ত্বাবধানে কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করেছে টিএম প্রোডাকশন্স। সম্প্রতি মহান জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঐতিহাসিক শিখা চিরন্তনকে কেন্দ্র করে চিত্রায়িত হয়েছে।
উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে গান বাংলা চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপসের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব, এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এর প্রকল্প পরিচালক মোঃ আব্দুল মান্নান, পিএএ, যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক সেলিনা পারভেজ, হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ম্যানেজার পূরবী মতিন, গান বাংলা টেলিভিশনের এমডি ফারজানা মুন্নী, ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল এবং মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীর।