রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসেবে ঘোষণা করায় ব্লিঙ্কেনের বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছেন মোমেন

0
303

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে বলে ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের দেয়া বিবৃতিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ স্বাগত জানিয়েছেন।

তিনি আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতিকে স্বাগত জানাই এবং আমরা আশা করি মিয়ানমার তাদের (রোহিঙ্গা) জনগণকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রত্যাবাসন করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা ভালো খবর যে, কানাডার পর যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

তিনি বলেন, মার্কিন এই স্বীকৃতি আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে কারণ ঢাকা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতাকে তাদের অনুপ্রবেশের সূচনা থেকেই গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করে আসছে।

ড. মোমেন আরও আশা প্রকাশ করেন যে, মার্কিন এই ঘোষণা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় সহায়ক হতে পারে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ব্লিঙ্কেনের এই ঘোষণার পর বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বিশ্বের বড় শক্তি যদি (মিয়ানমারকে) চাপ দেয় তবে (রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের) একটি সমাধান হবে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করলে ঢাকা খুব খুশি হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের দায় নয়, বিশ্বনেতাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। ব্লিঙ্কেন সোমবার ওয়াশিংটন ডিসি-তে ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এ ঘোষণা দেন।

ব্লিঙ্কেন বলেছেন, প্রমাণ রয়েছে যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ ছিল ব্যাপক ও পরিকল্পিত যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় দিয়েছে এবং তাদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের সামরিক অভিযানের পরে সেখানে এসে পৌঁছেছে। এ ঘটনাকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নির্মূলের জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ’ এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা একে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

গত সাড়ে চার বছরে একজন রোহিঙ্গাও দেশে ফেরত যায়নি। মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে, কিন্তু রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা আস্থার ঘাটতির কারণে প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা দুইবার ব্যর্থ হয়েছে।