অপচয়রোধে পানি রিসাইক্লিং করার উদ্যোগ নিতে হবে : তাজুল

0
257

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশে পানির অপচয়রোধে গৃহস্থালি এবং সকল শিল্প-কলকারখানায় ব্যবহৃত পানি রিসাইক্লিং করে ব্যবহার উপযোগী করার উদ্যোগ নিতে হবে।

আজ রাজধানীর একটি হোটেলে “বিশ্ব পানি দিবস” উদযাপন উপলক্ষে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বক্তৃতাকালে অব্যবহারযোগ্য পানি ব্যবহারযোগ্য করার জন্য বড় বড় সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের জন্য মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেকেই রিসাইক্লিং কাজকে কঠিন মনে করে থাকেন। কিন্তু এটি অসম্ভব নয়। পৃথিবীর বহু দেশ রিসাইক্লিং করে পানির ব্যবহার করছে।’

মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশেও এই ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য দরকার সার্বিক একটি ব্যবস্থাপনা। যে সকল প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-কলকারখানার ব্যবহৃত পানি রিসাইক্লিং করার সক্ষমতা রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই তা করতে হবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, ঢাকা শহরে প্রত্যেক বাসায় পাইপ লাইন দেওয়া অথবা রাস্তা খুঁড়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দরকার সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। এ জন্য প্রত্যেক বাসা-বাড়িতে সেপ্টিক ট্যাংক নিশ্চিত করতে হবে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নিয়ে পানি শোধন করে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মাস্টার প্ল্যান গ্রহণের জন্য ওয়াসাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ৭০ শতাংশ ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লক্ষ্য অর্জন করবে’। এ লক্ষ্যে সারাদেশে অনেকগুলো ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হচ্ছে।

মন্ত্রী জানান, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের জন্য যত গভীরে যাওয়া হবে আর্সেনিক ছাড়া তত বেশি হেভি মেটাল রয়েছে, যেগুলো পানির সঙ্গে উঠে আসবে এবং শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। তাই ভূগর্ভস্থ পানির পরিবর্তে ভূউপরিস্থ পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে।

তিনি আরও জানান, যে সকল এলাকায় পানির সংকট রয়েছে সে সকল অঞ্চলে পানি সরবরাহ করার জন্য ন্যাশনাল গ্রীড লাইন স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সারা দেশে অনেক ইকোনমিক জোন করা হচ্ছে। এসব জোনে প্রতিষ্ঠিত শিল্প-কলকারখানায় প্রচুর পরিমাণে পানির প্রয়োজন হবে। তিনি আরো বলেন, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ করছে সরকার। দেশের পানির প্রধানতম উৎসগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত, ইউনিসেফ এবং ডব্লিউএইচও’র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত।