শিশির মোরশেদ’র “দণ্ডিত রাইফেল” গ্রন্থ থেকে একটি কবিতা।

0
200

জিরোপয়েন্ট

 

 

যখন অলসতা আসে; ঈশ্বরকে মনে পড়ে
মৃত্যু নিয়ে ভাবি এবং বালিশ রাখি মাথার ওপর
উপুড় হয়ে শুই- কাউকে মনে করি না
লোডশেডিং হয়- গরমে ঘেমে যাই

টেবিলে গুছানো সাহিত্য বইয়ের শিরোনাম পড়ি
দু’চারটে কুকুর ঘেউঘেউ করে- ছোট বোন দৌঁড়ে পালায়
বিদ্যুৎ এলেই- মা তাড়াহুড়ো করে হিন্দি সিরায়ালের পর্দা উঠায়
বাবা গিয়ে রিমোট কেড়ে নেয়; খবর দ্যাখে

আর আমি খবর শুনি- তিনবছরের মেয়ে ধর্ষিত হয় পিতার হাতে
সংবাদটা শেষ না হতেই; চ্যানেল পরিবর্তন করেন বাবা
হয়তো লজ্জায় আর নয়তো ঘৃণায়

ধীরে ধীরে দাঁড়াই- জানলা খোললেই চোখে পড়ে পরকীয়া
একটু হেঁটে বোনের রুমে যাই; তার ফোনে ম্যাসেজ আসে
যেহেতু চোখের সামনে ফোন, না পড়ে পারি না
ম্যাসেজটা পড়লাম, লেখা এরকম ছিল
সেদিন তুমি আমাকে স্তনে হাত দিতে দাওনি
চুমুতে কি আসে যায়

লজ্জায় ঘৃণায় আর কিছু বলতে পারি নি

বাইরে এসে দেখি তিনটে কুকুরী হাফাচ্ছে
মনেপড়লো আজকে ছুটিরদিন- ভাদ্র মাসের ১তারিখ

পবিত্র হয়ে মসজিদের দিকে পা বাড়াতেই- ফোন বেজে উঠে
কল রিসিভ করতেই দেখি মেয়ের কণ্ঠ- বলছে
কি রে শালা? গতোরাতের টাকা কে দেবে?
রং নাম্বার বলে কেটে দিই
হাউমাউ করে কেঁদে ওঠা কারো গলার স্বর শুনে
বাইরে আসি- শুনি, প্রতিবেশী প্রবাসীর মৃত্যু সংবাদ

অতঃপর আবার অলসতা আসে; ঈশ্বরকে মনে পড়ে
উপুড় হয়ে শুই; বালিশ মাথার উপরে রেখে
মৃত্যু নিয়ে ভাবি।

২৫/০৮/২০১৭।