শিল্পকলায় প্রদর্শিত হলো যাত্রাপালা “আপন ভাই”

0
284

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল হলে গত রবিবার (১৪ আগস্ট ২০২২) এ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক যাত্রাপালা ‘আপন ভাই’ প্রদর্শিত হয়।

আব্দুল আওয়াল সরকার রচিত ড. সৈয়দ মামুন রেজার নির্দেশনায় যাত্রাপালাটিতে অভিনয় করেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

যাত্রা পালাটির নির্দেশক ড. সৈয়দ মামুন রেজা জানান, যাত্রা বাঙালির একান্ত নিজস্ব নাট্যসম্পদ। তবে দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, যাত্রার মতো এতো শক্তিশালী শিল্পমাধ্যম ক্রমশঃ আবেদন হারাচ্ছে। এক সময় যাত্রাশিল্প বাংলাদেশের বৃহত্তর সমাজ তথা গ্রামবাংলার সর্বস্তরের মানুষের কাছে ছিল বিনোদন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার প্রধানতম শিল্পমাধ্যম। বাঙালির দেশপ্রেম, ইতিহাসের পাঠ, বিপ্লবী চেতনা, নৈতিক মূল্যবোধ এবং অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী চেতনা ধারণে যাত্রাশিল্পের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত পালাটির কাহিনিতে দেখা যায়, ডা. সদরুল ও নসরুল দুই ভাই। ডা. সদরুল বিলেত থেকে ডাক্তারী পড়া শেষ করে নিজ গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার মহান পেশায় মনোনিবেশ করেন। তিনি রাজনীতি ও সমাজ সচেতন একজন ব্যক্তি এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। অন্যদিকে তাঁর ছোট ভাই নসরুল অর্থ-সম্পত্তির অপচয় ও আমোদ – ফূর্তি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সে স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়। নসরুলের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা ডা. সদরুলসহ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া অনেককে ধরে নিয়ে নির্মম অত্যাচার করে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কার্যক্রম ও অবস্থান সম্পর্কে জানতে চায়। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হবার লোভে নসরুল তার প্রেমিকাকেও পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেয়।

ডা. সদরুল সুকৌশলে খান সেনাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে পূনরায় মুক্তিযোদ্ধাদের সুসংগঠিত করে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প দখল করে নেয়। মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে ডা. সদরুল জানতে পারেন তাঁর আপন ছোট ভাই নসরুল গোপনে পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষে কাজ করেছে। পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পনের পরমূহুর্তে জনরোষ থেকে রক্ষা পেতে এবং প্রতিশোধ নিতে নসরুল তার বড় ভাই ডা. সদরুলকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।