বান্দরবান রাজগুরু বৌদ্ধবিহারে রক্ষিত বুদ্ধ মূর্তিটি ৮০০ বছরের পুরনোঃ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর

0
231


বান্দরবান প্রতিনিধি,

বান্দরবান রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে রক্ষিত বুদ্ধমূর্তিটি আট শত বছরের পুরনো উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে তিনজন গবেষক এই মূর্তিটির আপেক্ষিক সময়কাল নির্ধারণ করে গত ১৯ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা আজ বুধবার তার অফিস কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে বান্দরবান রাজগুরু বৌদ্ধবিহারের মূর্তিটির বয়স সম্পর্কে জানান।
দাখিলকৃত প্রতিবেদনের সূত্র উল্লেখ করে চেয়ারম্যান জানান মূর্তি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করে বান্দরবান রাজগুরু বুদ্ধ বিহারে রক্ষিত মূর্তিটি মায়ানমারের প‍্যাগান Pagan শিল্পরীতির প্রভাবে নির্মিত হয়েছে। মূর্তিটির নির্মাণ শিল্পরীতির বিবেচনায় আনুমানিক খ্রিস্টীয় ১২ থেকে ১৫ শতকের মধ্যে নির্মিত হতে পারে। সেই মোতাবেক মূর্তিটির নির্মাণ আনুমানিক সাড়ে ৫০০ থেকে ৮০০ বছর আগের হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে গবেষকগণ এর আগে বান্দরবান রাজগুরু বুদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন। তারা আলোকচিত্র এবং বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন। গবেষক দলটি বান্দরবান রাজগুরু বুদ্ধ বিহারে রক্ষিত মূর্তিগুলোর সাথে ১৪ থেকে ১৫ শতকে নির্মিত মায়ানমারের মিউয়াং Myohung বুদ্ধ মূর্তির নির্মাণশৈলীর সাদৃশ্য এবং প্রভাব খুঁজে পান। আলোকচিত্রের আপেক্ষিক বিশ্লেষণে রাজগুরু বুদ্ধ বিহারে রক্ষিত মূর্তিটির সাড়ে ৫০০ থেকে ৮০০ বছরের পুরানো বলে মতামত দেন। এটি পিতলের তৈরী একটি মূর্তি।
কমিটির সদস্যরা হলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ফিল্ড অফিসার মোহাম্মদ শাহিন আলম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক শারমিন রেজওয়ানা ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ডঃ মোঃ আতাউর রহমান।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন সুপ্রাচীন এই বুদ্ধমূর্তিটি দেশের সম্পদ এই মুহূর্তে রক্ষণাবেক্ষণে জেলা পরিষদ এবং মন্দির পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে একটি স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এছাড়াও ওয়াল হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন এবং বোমাং রাজাকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, বাংলাদেশে এক হাজার পাঁচশত বছরের পুরনো বুদ্ধমূর্তি আছে বলে জানা যায়। তবে পার্বত্যাঞ্চলে এর চেয়ে পুরনো কোনো বুদ্ধমূর্তি নেই। এটি নিয়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ পর্যটক এবং স্থানীয়দের মাঝে বেশ কৌতূহল এবং আগ্রহ দেখা দিয়েছে।