বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ৪৬টি ব্যাংক ও ৯ টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চুক্তি স্বাক্ষরিত

0
162

সিএমএসএমই খাতে মেয়াদি ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম

বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই এন্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস্ ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে ২৪ আগস্ট ২০২২ তারিখ বুধবার সকাল ১১:০০ ঘটিকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে ‘সিএমএসএমই খাতে মেয়াদী ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ এর আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে অংশগ্রহণমূলক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জনাব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ডেপুটি গভর্নর জনাব আবু ফরাহ মোঃ নাছের উপস্থিত ছিলেন। ৪৬টি ব্যাংক ও ০৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীবৃন্দ ও এসএমই প্রধানগণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই এন্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস্ ডিপার্টমেন্ট এর দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালকসহ বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এই স্কিমের আওতায় প্রতিটি ব্যাংকের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের নিকট পোঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করে Association of Bankers, Bangladesh এর সভাপতি জনাব সেলিম আর এফ হোসেন, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম এবং Bangladesh Leasing and Finance Companies Association এর সভাপতি জনাব মমিনুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জনাব আব্দুর রউফ তালুকদার প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ (সিএমএসএমই) গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে মর্মে উল্লেখ করেন। এ খাতটি শ্রমনিবিড় ও স্বল্প পুঁজি নির্ভর হওয়ায় এবং এর উৎপাদন সময়কাল স্বল্প হওয়ায় আমদানী বিকল্প সেবা/পণ্য উৎপাদনসহ জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ইতিবাচক অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশকে কর্মসংস্থানমুখী ও শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে সিএমএসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও, তিনি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পণ্য/সেবা সরবরাহের পরিমাণ বৃদ্ধিতে এই স্কিমের অবদান থাকবে মর্মে অবহিত করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল হতে ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার) কোটি টাকার এই আবর্তনশীল তহবিল গঠন করা হয়েছে যার মেয়াদ প্রাথমিকভাবে ৩ (তিন) বছর। প্রয়োজনে তহবিলের পরিমাণ ও মেয়াদ বৃদ্ধি করা হবে। গভর্নর মহোদয় তাঁর বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন যে, সিএমএসএমই খাত উন্নয়নের মাধ্যমে ভিশন-২০৪১ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

অর্থায়নকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অনুকূলে এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়িত অর্থের বিপরীতে বার্ষিক সুদের হার হবে ২% (দুই শতাংশ) এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক গ্রাহক পর্যায়ে আরোপিত বার্ষিক সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৭% (সাত শতাংশ)। সর্বোচ্চ ৬ (ছয়) মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণ/বিনিয়োগ এর মেয়াদ হবে ঋণ/বিনিয়োগ এর প্রকারভেদে সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) বছর।

ক্লাস্টারভূক্ত সিএমএসএমই উদ্যোক্তাগণকে পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে সর্বাধিক অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। এতদ্ব্যতীত, নারী উদ্যোক্তা, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন উদ্যোক্তা এবং নানাবিধ দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ উদ্যোক্তাগণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। এই স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত মোট ঋণ/বিনিয়োগ এর নূন্যতম ৭৫% (পঁচাত্তর শতাংশ) কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে সামগ্রিকভাবে বিতরণ করতে হবে, এবং সর্বোচ্চ ২৫% (পঁচিশ শতাংশ) মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা যাবে। বিতরণকৃত মোট ঋণ/বিনিয়োগ এর নূন্যতম ৭০% (সত্তর শতাংশ) উৎপাদন ও সেবা খাতে এবং সর্বোচ্চ ৩০% (ত্রিশ শতাংশ) ব্যবসা খাতে প্রদান করা যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই স্কিমের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য নিবিড় তদারকি করবে।