কাজিপুরে দুর্গম চরাঞ্চলে নির্মিত হচ্ছে ৪০ কিলোমিটার রাস্তা

0
107


টি এম কামাল : চারদিকে যতদূর চোখ যায় শুধু বালি। মাঝে মাঝে কিছু ঘরবাড়ি। প্রতিবছর বন্যা-বর্ষায় এই ঘরবাড়িগুলো থেকে নৌকা ছাড়া যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকে না। আর শুষ্ক মৌসুমে রাস্তা না থাকায় পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয় এখানে বসবাসকারীদের। এভাবেই জীবনযাপনে অভ্যস্ত সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার যমুনা চরের ৬ ইউনিয়নের পৌনে দুই লাখ মানুষ। গত এক দশকের মধ্যে কিছু পাকা রাস্তা নির্মিত হয়েছে। কিন্তু প্রতিবছর বন্যার ছোবলে বারবার ওই রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও এই অঞ্চলের মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্যে এ বছর নেয়া হয়েছে বেশ কিছু প্রকল্প। তারই ধারাবাহিকতায় শুধুমাত্র মনসুর নগর ইউনিয়নেই ১০টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

কাজিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কাজিপুরের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন যমুনার চরে অবস্থিত ছয়টি ইউনিয়নের রাস্তাঘাট নির্মাণে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। টিআর, কাবিখা, কাবিটা’র মাধ্যমে এই প্রকল্পের মাধ্যমে এ বছর নির্মিত মাটির রাস্তাগুলো বন্যার লেভেল থেকে উঁচু করা হচ্ছে। এতে করে রাস্তাগুলো টেকসই হবে, জনগণের পণ্য পরিবহন ও চলাচলে সুবিধা হবে। এরই মধ্যে মনসুর নগরের দশটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৪০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার কাজ আশিভাগ শেষ হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৪৩ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে টিআর বরাদ্দ ১৯ লক্ষ টাকা আর কাবিখার মাধ্যমে ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে।

সরেজমিনে মনসুর নগর, চরগিরিশের ৮টি এবং নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের ৪টি চলমান রাস্তা নির্মাণের প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি ঘুরে দেখেন কাজিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান। এসময় তিনি জানান, শুধু সরকারি বরাদ্দ নয়, এলাকার নেতাকর্মীরাও নিজেদের টাকায় এই কাজে সহায়তা করছেন। কারণ আসন্ন বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই এই কাজ শেষ করতে হবে। পরে মাটি পাওয়া যাবে না। মনসুর নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সসম্পাদক নূরুল ইসলাম জানান, আমাদের ইউনিয়নে এবার ৪টি নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তা নির্মাণের জন্যে আমরা নিজেরা বিনে পয়সায় জায়গা দিয়েছি।

পিআইও একেএম শাহা আলম মোল্লা জানান, বন্যার লেভেল থেকে উঁচু করে এই রাস্তাগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে বরাদ্দপ্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। ইউএনও জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, এবারই প্রথম ফ্লাড লেভেলের চিন্তা করে চরের ছয় ইউনিয়নে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে চরে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ। এছাড়া আরও অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এখন রাস্তাগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হলে চরের চেহারাই পাল্টে যাবে। # (ছবি-আছে)