আজিরন বেওয়া যমুনা চরপাড়ের নিম্নআয়ের মানুষের দুই দশকের জীবনলিপি

0
209

“আজিরন বেওয়া’
যমুনা চরের নিম্নআয়ের মানুষ গুলোর দুইদশকের(১৯৭৫-৯৫) জীবনলীপি।

মীর রবি,


হাজার বছর ধরে উপন্যাসের কথা বললেই মনে পড়ে জহির রায়হান এর কথা । লালসালু মনে করিয়ে দেয় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে । আমার বিশ্বাস তাঁদের মত করে আজিরন বেওয়া উপন্যাসটি রাশেদ রেহমানকে একটা শক্তিশালী প্লাটফর্ম তৈরী করে রাখবে । তিনি আর লিখুক বা নাই লিখুক, আজিরন বেওয়াই তাকে বাঁচিয়ে রাখবে । যমুনার পাড়ের মানুষের সুখ দুঃখ নিয়ে লেখা এই উপন্যাসটিতে তিনি চরাঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন । নিপূণভাবে প্রকাশ করেছেন গ্রামীণ জীবনে নর নারীর প্রেম পরকীয়া, স্বামী ভক্তি, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসবোধ । প্রধান চরিত্র আজিরন বেওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি দেখিয়েছেন প্রান্তিক অঞ্চলের চিরায়ত বাঙালি বধূর রূপ ও জীবন সংগ্রামের গল্প । দেখিয়েছেন আজিরনের স্বামী বছিরের প্রতি আজিরনের শ্রদ্ধা ভালবাসা ও আজিরনের প্রতি বছিরের বিশ্বাস বোধ ও অঘাধ আস্থা । যা আমরা সুফিয়া ও মানিকের মাঝে দেখতে পাইনা । মানিকের যৌন অক্ষমতা অসুখী সুফিয়াকে করেছে সাইফুলের প্রতি বিকৃত যৌনভাব । আবার সাইফুলের বিকৃত বাসনা ছিল ব্যক্তিত্বহীন । বেপারীর মেয়ের সাথে ছলনা, মানিক ও আজিরনের সরলতা ও বিশ্বাসের সাথে প্রতারণা তাকে করেছে নীতিভ্রষ্ট । দেখতে পাই অসহায়দের প্রতি ব্যাপারীর শোষণ … সেই সঙ্গে দেখতে পাই ব্যাপারীর স্ত্রীর অমানবিক আচরণ । গরু চুরির মিথ্যা অভিযোগে সমাজের তথাকথিত মাতববরের নির্যাতনের শিকার আজিবারের আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে কিশোর বয়সের এক সকরুণ ট্রাজেডী । ট্রাজেডী উপন্যাসের শেষ পরিণতিতে নিয়ে গেছে বছিরের মৃত্যুর খবরের মাঝ দিয়ে । ঘটনার প্রক্রমায় আজিরনের চরিত্রে প্রতীয়মান হয়েছে এক সংগ্রামী নারীর জীবন গাঁথা । এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, তিউড়ি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই বইটি রাশেদ রেহমানের সফল প্রয়াস ।