স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সিভিল সার্ভিস ২০৪১-এর যাত্রা শুরু

0
109

ঢাকা, ০২ জুলাই ২০২২:

২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনসেবা প্রদান ও দেশের জনগণের সমস্যা মোকাবেলায় গভপ্রেনিউরশীপের মাধ্যমে নতুন পদ্ধতি ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সদা তৎপর, উদ্যমী ও যোগ্যতাসম্পন্ন জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে হবে।

এলক্ষ্যে শনিবার রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ বিনির্মাণে সিভিল সার্ভিসের ভূমিকা’-শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে এটুআই। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব জনাব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম এর সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জনাব মোঃ সামসুল আরেফিন মন্ত্রিপরিষদ বিভগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এবং সিভিল সার্ভিস ২০৪১: ডিজিটাল লিডারশিপ জার্নি বিষয়ে বিস্তারিত উপস্থাপনা প্রদান করেন এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এবং এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজার জনাব আনীর চৌধুরী। সিভিল সার্ভিস ২০৪১-এর কার্যক্রম শুরু করায় জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল (অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কিত) জনাব লিউ ঝেন মিন একটি লিখিত শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জনাব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমলাতন্ত্রের কাজ হলো জনগণের চাহিদা অনুযায়ী দেশের সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে জনকল্যাণ নিশ্চিত করা। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রক্রিয়ায় সকল বাধা ডিঙিয়ে আমরা সফল হয়েছি। আমাদেরকে পরবর্তী প্রজন্মের গভর্নেন্সের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। যেখানে মূল চ্যালেঞ্জ হবে অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ম্যানেজমেন্ট ও গভর্নেন্স এর সকল শাখায় উন্নয়ন ঘটানো। বৈশ্বিক ও জাতীয় প্রেক্ষাপটের কথা মাথায় রেখে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। প্রাথমিকভাবে ছোট ছোট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তা অর্জনে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করতে হবে। যার ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালকে আমরা মধ্যবর্তী পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও কাজ করছি। তাছাড়া এসডিজি গ্রাজুয়েশনের পর বাংলাদেশ যেসকল সুবিধা হারাবে সে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তাও মাথায় রাখতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ বলেন, সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে প্রযুক্তির বিকল্প নেই। বর্তমানে দেশের ৩৮০০ ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড সংযোগ পৌঁছে গেছে। পর্যায়ক্রমে দেশের বাকি ইউনিয়নগুলোতেও উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেওয়া হবে। সরকারের ওয়েবসাইটগুলোর মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য ডাটা সরবরাহে নিয়মিত পোর্টালের তথ্য আপডেট করতে হবে। এছাড়া প্রত্যেক বিভাগের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম বলেন, ২০৪১ সালে কী ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এবং সেই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রযুক্তিবান্ধব জনশক্তি তৈরিতে এরই মধ্যে জনপ্রশাসনের প্রশিক্ষণ কারিকুলাম রিডিজাইন করা হয়েছে। তবে ওইসময়ে যারা নেতৃত্ব দিবেন তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের তাদের উপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। সেইসাথে বেসরকারি খাতের উন্নয়নেও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রেক্ষাপটে ‘ভিশন ২০৪১: স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যপূরণে যথার্থ জ্ঞান, দক্ষতা এবং যোগ্যতাসম্পন্ন সিভিল সার্ভিস গড়ে তুলতে ডিজিটাল লিডারশিপ জার্নি কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। উন্নত সমাজ বিনির্মাণ ও সমাজ জীবনের পরিবর্তনশীল ধারার মধ্যে জনসেবার নিয়োজিত একজন সরকারি কর্মকর্তার জন্য ক্রমোন্নতিশীল যাত্রার পথনির্দেশক ও সহায়ক প্ল্যাটফর্ম হলো ‘সিভিল সার্ভিস ২০৪১: ডিজিটাল লিডারশিপ জার্নি’, যা এটুআই কর্তৃক পরিচালনা করা হচ্ছে। সিভিল সার্ভিস ২০৪১ এর মধ্য দিয়ে গভপ্রেনিউরশীপের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতা, উদ্দেশ্য এবং সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। নেতৃত্ব, প্রযুক্তিবান্ধব, ডাটা নির্ভর এবং প্রত্যাশিত মানের জনবান্ধব সেবা প্রদানে সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষম করে তুলবে ডিজিটাল লিডারশিপ জার্নি। এছাড়াও পাবলিক-প্রাইভেট-একাডেমিক এই শ্রেণির অংশগ্রহণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সহযোগিতায়মূলক শিক্ষা এবং চিন্তা প্রসারেও কাজ করবে ‘সিভিল সার্ভিস ২০৪১: ডিজিটাল লিডারশিপ জার্নি’।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সিনিয়র সচিব, সচিবগণ, উপাচার্যগণ, যুগ্মসচিববৃন্দ, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, মাঠপর্যায় থেকে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ, জেলা প্রশাসকবৃন্দ, সিভিল সার্ভিসের সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। এছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, এটুআই এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নিয়েছিলেন।