নারায়নগঞ্জের হোটেলে নারীসহ অবরুদ্ধ হেফাজত নেতা মামুনুল হক

0
320

দিডেইলিনিউসান ডেস্কঃ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্ট নামে একটি রিসোর্টে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন নারীকে নিয়ে তিনি ওই রিসোর্টে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন। তবে মামুনুল বলছেন, দুই বছর আগে এই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে তিনি বিয়ে করেছেন, রিপোর্ট করেছে সারাবাংলা.নেট।

নারায়নগঞ্জের একটি স্থানীয় টেলিভিশন মামুনুল হককে অবরুদ্ধের ভিডিওচিত্র সরাসরি ফেইসবুকে লাইভে সম্প্রচার করে। তখন মামুনুলকে খুব ভীত-সন্ত্রস্ত দেখা যায়।

শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে ওই রিসোর্টে মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনার বেশকিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, ঘটনাস্থলে পুলিশ-প্রশাসন উপস্থিত আছে। তারা ঘটনাটি যাচাই করে দেখছে।

সোনারগাঁও উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। এখন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে আছেন। তারা মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

ফেইসবুক ভিডিও লিংকঃ সোনারগাঁওয়ে হেফাজত নেতা নারীসহ অবরুদ্ধ

আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা যাচাই-বাছাই করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রয়্যাল রিসোর্টের একটি কক্ষে মামুনুল হককে ঘিরে রেখেছেন বেশ কয়েকজন। তারা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে একজন নারীকে নিয়ে ওই রিসোর্টে অবস্থান করার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তবে মামুনুল হক তাদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ওই নারীকে তিনি দুই বছর আগে বিয়ে করেছেন। তাকে নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছেন। তবে তিনি যে এখানে এসেছেন, সেটি হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা জানেন না।

ইসলামী ঐক্য জোটের প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের অভিভাবক শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের ছেলে। ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব নির্বাচিত হন। ওই বছরেরই ১৫ নভেম্বর হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিবের দায়িত্ব পান তিনি, ২৬ ডিসেম্বর তাকে হেফাজতের ঢাকা মহানগরীর মহাসচিবের দায়িত্বও দেওয়া হয়।

গত বছরেরই শেষ দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে সমালোচিত হন মামুনুল হক। তাদের বিরোধিতা না মেনে ভাস্কর্য তৈরি করা হলে ‘তৌহিদি জনতা’ নিয়ে শাপলা চত্বর কায়েম করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। ওই সময় চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে একটি সমাবেশে তার উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলো তার বিরোধিতা করে। বিরোধিতার মুখে মামুনুল হাটহাজারীতে গেলেও সমাবেশে অংশ নেননি। এর পরের কয়েক সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন জেলায় তার বেশ কয়েকটি সমাবেশ স্থগিত হয়ে যায়।

সবশেষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানোর বিরোধিতা করেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক।

এ নিয়ে হেফাজতের পক্ষ থেকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সমাবেশ করা হয়। মোদি এই বিরোধিতার ক্ষেত্রেও একটা সময় পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন মামুনুল হক। এর আগে, ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ১২ মে গ্রেফতার করা হয়েছিল মামুনুল হককে।

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে হেফাজতে ইসলাম।