নাইম ফিরে পেলো হারানো শৈশব

433
1538

শাহপরান হক:

ছোট্ট নাইমের বয়স ৯ বছর। গোলগাল মায়াভরা মুখ। মুগদা সরকারি হাসপাতালের সামনে গেলেই দেখা যেত তাঁকে। কাঁধে চার-পাঁচ কেজি ওজনের সিগারেট আর চায়ের বাক্স। ছোট্ট হাতে পথচারীদের কাছে পান–সিগরেট বেচতো সে।

নাইমের বাবা রিকশা চালান। মা মানুষের ঘরে কাজ করতেন। কিন্তু অসুস্থতার জন্য সেটাও ঠিকঠাক করতে পারছেন না। ছোট্ট নাইমের কাঁধে হাত রেখে স্কুলে যাবে কি না জিজ্ঞেস করতেই কেঁদে ফেলে সে। সারা দিনে চার-পাঁচ ঘণ্টার পরিশ্রমে তাঁর আয় ২–৩শ টাকা। সেটা সে তুলে দেয় বাবার হাতে।

জাতীয় দৈনিকে বেশ বড় করে ছাপা হয় নাইমের ছবি। এগিয়ে আসে ফেসবুকভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ‘সংযোগ: কানেক্টিং পিপল’। নাইমকে স্কুলে ভর্তি করে দেন সংযোগের অন্যতম সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী শাহাদাৎ হোসেন। দশম শ্রেণী পর্যন্ত তার পড়াশোনার সব খরচের দায়িত্ব নিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি নাইমের পড়াশোনা যেন বন্ধ না হয় সেজন্য নাইমের বাবাকে একটা রিকশা কিনে দিচ্ছে সংযোগ।

নাইমের পাশে দাঁড়ানোর এ প্রচেষ্টা সম্পর্কে সংযোগের অন্যতম সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী ইমতিয়াজ আহমেদ সুহান জানান, আমাদের দেশে এমন অসংখ্য নাইম আছে। ওদের কোন শৈশব নেই। স্কুল নেই। আমরা একজন নাইমের পাশে দাঁড়ালাম। সামর্থবান সবাই যদি এমন একজন করে নাইমের দায়িত্ব নেন, তাহলে নাইমেরা স্কুলে যেতে পারবে, শৈশব ফিরে পাবে। এভাবে দেশও বদলে যাবে।

নাইম মুগদার প্রাথমিক মান্ডা স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। করোনা পেরিয়ে স্কুল খুললেই নতুন স্কুলড্রেস পরে স্কুলে যাবে সে। বাবা লিটন মিয়াও খুশি। সংযোগের দেওয়া নতুন সবজি–ভ্যান নিয়ে সে রাস্তায় বেরিয়ে পরবে।