থামছে না যমুনায় বালু উত্তোলন

0
324


টি এম কামাল : সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে প্রশাসনের অব্যাহত অভিযানেও থামছে না যমুনা থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন। বালু ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় এই ব্যবসায়ীরা জরিমানা দিয়ে আবারো নেমে পড়ছে বালু উত্তোলনে। বালুখেকোদের তাবে তাগুবে স্বাভাবিকতা হারাচ্ছে যমুনা নদী। এলাকাবাসীর অভিমত ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা না হলে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হবে না।

স্থানীয়রা জানান, চৌহালী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ভূতের মোড়। এখানে দীর্ঘ দিন ধরে একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাইপের সাহায্যে নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করে ভলগেটের সাহায্যে পাড়ে এনে স্তৃপ করে রাখছে। পরে চড়ামূল্যে এই এলাকা ছাড়াও পাশের জেলা টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় ট্রাক ও ট্রলিতে করে নিয়ে বিক্রি করেছে। তবে থেমে নেই উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। গত মঙ্গলবার দুপুরে জনতা স্কুলের পাশে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে জুয়েল রানা নামের একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহিদ আল হাসান। এ ছাড়া ২৯ এপ্রিল ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৌহালীর ইউএনও আফসানা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে জোতপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৭ লাখ টাকা মূল্যের অবৈধ বালু জব্দ করে লাল নিশান উড়ানো হয়। এ সময় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা শেষে একশ্রেণীর বালু উত্তোলনকারী চক্র জরিমানা দিতে প্রস্তৃতি নেয়। তারা বালু তোলার সর্বনিম্ন জরিমানা ৫০ হাজার টাকা দিয়ে লাখ লাখ টাকার বালু হজম করার স্বপ্ন দেখেন। স্থানীয়রা জানান, সরকারি কাজে কিংবা জরুরি রাস্তা মেরামতের নাম করে কিছু ব্যক্তি জনতা স্কুলের পাশে, জোতপাড়া, হাসপাতাল এলাকা, বিনানই ও খাসপুখুরিয়া এলাকায় বিভিন্ন উপায়ে বালু ব্যবসা করে আসছে। এখানে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে কৌশলে তারা রাতের বেলা পাইপের সাহায্যে লাখ লাখ ঘনফুট বালু তুলছে। পরে চড়া দামে বিক্রি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। অপর দিকে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। এ কারণে বিগত বছরগুলোতে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বহু ঘরবাড়ি নদীতে চলে গেছে। এ ছাড়া হুমকির মুখে পড়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও বহু শিক্ষা-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি। এ বিষয়ে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতরা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি নন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বালু শ্রমিক জানান, এলাকার মানুষের ভিটা বাড়ি ও সড়ক নির্মাণের স্বার্থে বালু তোলা হয়। সরকারি কোনো মহাল না থাকায় কিছু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেই বালুর ব্যবসা চলে।
তবে চৌহালী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, বালু উত্তোলন ও বিক্রির ব্যাপারে পুলিশের দেখভাল করার কিছু নেই। আর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহিদ আল হাসান জানান, অবৈধ বালু তোলা বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলবে। এ ছাড়া রাতে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ভিন্ন কৌশলে অভিযান পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা ইয়াসমিন জানান, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলন ও বিক্রির বিরুদ্ধে প্রশাসন সব সময় তৎপর রয়েছে। #

টি এম কামাল
০৭-০৬-২০২১
থামছে না যমুনায় বালু উত্তোলন

টি এম কামাল : সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে প্রশাসনের অব্যাহত অভিযানেও থামছে না যমুনা থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন। বালু ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় এই ব্যবসায়ীরা জরিমানা দিয়ে আবারো নেমে পড়ছে বালু উত্তোলনে। বালুখেকোদের তাবে তাগুবে স্বাভাবিকতা হারাচ্ছে যমুনা নদী। এলাকাবাসীর অভিমত ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা না হলে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হবে না।

স্থানীয়রা জানান, চৌহালী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ভূতের মোড়। এখানে দীর্ঘ দিন ধরে একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাইপের সাহায্যে নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করে ভলগেটের সাহায্যে পাড়ে এনে স্তৃপ করে রাখছে। পরে চড়ামূল্যে এই এলাকা ছাড়াও পাশের জেলা টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় ট্রাক ও ট্রলিতে করে নিয়ে বিক্রি করেছে। তবে থেমে নেই উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। গত মঙ্গলবার দুপুরে জনতা স্কুলের পাশে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে জুয়েল রানা নামের একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহিদ আল হাসান। এ ছাড়া ২৯ এপ্রিল ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৌহালীর ইউএনও আফসানা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে জোতপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৭ লাখ টাকা মূল্যের অবৈধ বালু জব্দ করে লাল নিশান উড়ানো হয়। এ সময় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা শেষে একশ্রেণীর বালু উত্তোলনকারী চক্র জরিমানা দিতে প্রস্তৃতি নেয়। তারা বালু তোলার সর্বনিম্ন জরিমানা ৫০ হাজার টাকা দিয়ে লাখ লাখ টাকার বালু হজম করার স্বপ্ন দেখেন। স্থানীয়রা জানান, সরকারি কাজে কিংবা জরুরি রাস্তা মেরামতের নাম করে কিছু ব্যক্তি জনতা স্কুলের পাশে, জোতপাড়া, হাসপাতাল এলাকা, বিনানই ও খাসপুখুরিয়া এলাকায় বিভিন্ন উপায়ে বালু ব্যবসা করে আসছে। এখানে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে কৌশলে তারা রাতের বেলা পাইপের সাহায্যে লাখ লাখ ঘনফুট বালু তুলছে। পরে চড়া দামে বিক্রি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। অপর দিকে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। এ কারণে বিগত বছরগুলোতে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বহু ঘরবাড়ি নদীতে চলে গেছে। এ ছাড়া হুমকির মুখে পড়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও বহু শিক্ষা-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি। এ বিষয়ে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতরা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি নন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বালু শ্রমিক জানান, এলাকার মানুষের ভিটা বাড়ি ও সড়ক নির্মাণের স্বার্থে বালু তোলা হয়। সরকারি কোনো মহাল না থাকায় কিছু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেই বালুর ব্যবসা চলে।
তবে চৌহালী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, বালু উত্তোলন ও বিক্রির ব্যাপারে পুলিশের দেখভাল করার কিছু নেই। আর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহিদ আল হাসান জানান, অবৈধ বালু তোলা বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলবে। এ ছাড়া রাতে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ভিন্ন কৌশলে অভিযান পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা ইয়াসমিন জানান, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলন ও বিক্রির বিরুদ্ধে প্রশাসন সব সময় তৎপর রয়েছে। #