উপকূলের ২ জেলায় ইউএসএআইডি’র নবযাত্রা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লো ২ বছর

0
119

উপকূলের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে নবযাত্রা প্রকল্প

খুলনা, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২:
উপকূলীয় জেলা খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় ইউএসএআইডি’র নবযাত্রা প্রকল্প ৭ বছরের মেয়াদ শেষে আরো ২ বছরের জন্য অনুমোদন পেয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে।

প্রকল্পটি ২০১৫ সাল থেকে থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় জনগণের দোড়গোড়ায় সমন্বিত সেবা প্রদান করে আসছে। উপকূলের বিপন্ন মানুষের টেকসই উন্নয়নে নবযাত্রা প্রকল্পটি ২০২৪ সাল পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

রবিবার খুলনার সিএসএস আভা সেন্টারে আয়োজিত নবযাত্রা প্রকল্পের ৭-বছরের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। খুলনা ও সাতক্ষীরার ৪টি উপজেলাধীন ৪০টি ইউনিয়নের অধীন ৭৪০টি গ্রামে ব্যাতিক্রমী এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, উইনরক ইন্টারন্যাশনাল, এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ওয়ার্ল্ড ভিশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও পরিচালক- স্থানীয় সরকার (অতিরিক্ত দায়িত্ব), খুলনা বিভাগ, এবং সভাপতিত্ব করেন প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ও এমএন্ডই সিনিয়র ম্যানেজার রণক সি. মোহন্ত

প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ ফেরদৌসী আক্তার, উপ-পরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, খুলনা বিভাগ; মোঃ ইকবাল হোসেন, পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর (ডিওই), খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়।

এছাড়া খুলনা বিভাগের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, দাকোপ ও কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে দাকোপ ও কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান, নবযাত্রা প্রকল্পের অংশীদারদের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালা সঞ্চালনা করেন নবযাত্রা প্রকল্পের সুশাসন ও সামাজিক জবাবদিহি উপদেষ্টা নির্মল সরকার।

নবযাত্রা প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে সাতবছরব্যাপী নানা কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরেন সিনিয়র অপারেশন ম্যানেজার আশীষ কুমার হালদার। নবযাত্রার সিনিয়র কারিগরি উপদেষ্টা ড. মুশতাক আহমেদ, নবযাত্রা-২ এর সম্পর্কে তথ্য সহভাগিতা করেন।

প্রধান অতিথি মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, “নবযাত্রা প্রকল্প ছয়টি উপাদানের অধীনে মানুষের জীবনমান টেকসই উন্নয়নে কাজ করেছে এবং সফলভাবে জনগণ, সরকারি প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করেছে।”

“প্রকল্পটি প্রথমে মানুষকে সক্ষম করেছে এবং তাদের উদ্যোক্তা হিসাবে তৈরি করেছে এবং এখনও টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যক্রমগুলি পর্যবেক্ষণ করছে”।

তিনি আরো বলেন যে “নবযাত্রা প্রকল্প তাদের দেয়া অর্থ সহায়তা মানুষের উন্নয়নে সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করেছে।”

মোঃ শহিদুল ইসলাম আরো বলেন, “আমরা সারাজীবন পরনির্ভরশীল থাকতে চাই না। আমরা স্বাবলম্বী হতে চাই। নবযাত্রা প্রকল্প টেকসই উন্নয়নে কাজ করেছে।”

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ডাঃ ফেরদৌসী আক্তার বলেন, “আমি নবযাত্রার কার্যক্রম পরিদর্শন করেছি। আমি দেখেছি কিভাবে মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়াররা কাজ করছে। আমরা নবযাত্রার কার্যক্রমে খুবই খুশি।”

তিনি ওয়ার্ল্ড ভিশনকে খুলনা ও সাতক্ষীরার অন্যান্য প্রকল্প কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি মোঃ ইকবাল হোসেন, পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর (ডিওই), খুলনা বিভাগীয় কার্যালয় বলেন, “নবযাত্রা প্রকল্প জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জন্য ৪টি অতি দুর্যোগ-প্রবণ উপজেলা নির্বাচন করেছে। প্রকল্পটি এই দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মানব সম্পদ উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।”

তিনি কৃষি খাতে আরও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন যাতে মানুষ নতুন নতুন প্রযুক্তি শিখতে পারে এবং উৎপাদন বাড়াতে তা কাজে লাগাতে পারে।

অনুষ্ঠানে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ নবযাত্রা প্রকল্পের অংশীদারদের ধন্যবাদ জানায়। নবযাত্রা প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৮৫৯,৭০৪ মানুষকে সমন্বিতভাবে ওয়াশ, মাতৃ, শিশু স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, জেন্ডার, কৃষি এবং বিকল্প জীবিকা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং সুশাসন ও সামাজিক জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে সেবা প্রদান করা হয়েছে।