আমার দেখা একজন দেশ প্রেমিক তরুণ সাংবাদিক, সে হঠাৎ জেলে!

0
160

ছেলেটিকে আমি চিনেছি লিখা লিখির মাধ্যমে। আমি যেহেতু দূরপরবাস থেকে লিখি, নানা ভাবে দেশের অনেক সাংবাদিকদের সঙ্গে কিছুটা যোগাযোগ হয়। আমার মতামত অনেক সময় দেশের চলমান পরিস্থিতির সঙ্গে মিল না থাকার কারণে লিখা পাবলিশ হয় না। দেশের নিয়মানুযায়ী সাংবাদিকরা বলে দেন লিখা ছাড়া যাবে না, ছাড়লে চাকরি থাকবে না।

আমি দেশের বাইরেও লিখি তবে বাংলাদেশ নিয়ে নয়, লিখি যেমন সুইডেনের নানা বিষয়ের উপর। গণতন্ত্রের দেশেও যখন যা খুশি বলা বা লিখা যায় না। যাইহোক দেশের পরিকাঠামোর উপর ভিত্তি করে সাংবাদিকরা লিখা প্রকাশ করেন এবং আমিও নিজেকে সেই ভাবে অ্যাডজাস্ট করে করে চলছি।

আমি অতীতে কয়েকজন সাংবাদিককে সুইডেন সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে আশার সুযোগ করে দিয়েছি যাতে করে তারা একটি গ্লোবাল পার্সপেকিটিভস পায় সাংবাদিকতা, সততা এবং নৈতিকতার উপর।

মিজানুর রহমান সোহেল তাদের মধ্যে একজন। সোহেল অতি ভদ্রছেলে, পরিবারের বড় ছেলে অনেক দায়ীত্ব কর্তব্য পালন করে তাকে চলতে হয়। সে জানে তাকে সরল সহজ পথে থেকে কাজ করতে হবে, নইলে একটি বড় পরিবার অনেক আশার আলো থেকে বঞ্চিত হবে। সাংবদিকতার পাশাপাশি সে শেয়ারে অন্যান্যদের সঙ্গে কাজ করেছে। হয়তবা এক্সট্রা কিছু রোজগার করতে।

বিমানের টিকেটের ব্যবসা করতে গিয়ে টোয়েন্টিফোর টিকেটকাণ্ডে প্রতারণার শিকার হয়ে নিজের পুঁজি হারিয়েছে একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন ইনচার্জ সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল। এ জন্য প্রতারণা করে পালিয়ে যাওয়া ব্যবসায়িক অংশীদারদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে সে। কিন্তু প্রতারণার শিকার হলেও সেই ঘটনায় হওয়া অন্য মামলায় তাকেই গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

যতটুকু জানতে পেরেছি সব কিছুই দেশের নিয়মানুযায়ী এবং কোন রকম দুর্নীতি ছাড়া সোহেল ব্যবসা করেছে। ব্যবসায় লাভ লোকসান বলে কথা রয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সুইডেনে স্টক শেয়ারের ব্যবসা করতে গিয়ে বড় আকারে বাড়ি খেয়েছি। প্রচুর অর্থ দন্ড দিয়েছি। আবার একই সাথে দেখেছি বন্ধুরা অল্প পয়সায় একই ধরনের ব্যবসায় প্রচন্ড লাভোবান হয়েছে। ধরে নিয়েছি আমি সেই লুজার যার স্টরি কেও কখনও জানবে না, মোটিভেটেড হবে না।

যাইহোক শুনেছি সোহেল তার পার্শিক ব্যবসায় বড় আকারে বাড়ি খেয়েছে। দুঃখ্যের বিষয় যাদের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত ছিল তারা সমস্থ টাকা পয়সা আত্নসাৎ করে দেশ থেকে পালিয়েছে। সোহেল যথা সময়ে কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়টি দিয়েছে। সে অন্যদের মত দেশ ছাড়েনি যদিও তার পৃথিবীর যে কোন দেশে ভ্রমণ করার সুযোগ রয়েছে। অপরাধি হলে আমার বিশ্বাস সেও অন্যদের মত দেশ ছেড়ে ভাগতো।

তারপরও যদি সে অপরাধী হয়ে থাকে অবশ্যই তাকে সাস্থি পেতে হবে কারণ আইন সবার জন্যই সমান কিন্তু অবাক হয়েছি জেনে বিচারের আগেই তাকে জেলে ঢুকানো হয়েছে? বাংলাদেশের বর্তমান সমস্যা আমাদের বেশ চিন্তিত করে তুলছে এই কারণে বড় বড় ‘রাঘব বোয়ালের’ কিছুই হচ্ছে না অন্যদিকে সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে জীবন যাপন করছে। আমি দেশের বিচার বিভাগের দৃষ্টি আকর্শন করছি, (সোহেলকে আমি তিন বছরের বেশি সময় ধরে চিনি। আমার এখানে এসেছে আমার সঙ্গে ঘুরেছে ইউরোপ।

পরিবারের বড় ছেলে বাবা-মা ভাইবোন সহ নিজের পরিবারের দায়ীত্ব্র সাথে দেশের কথা ভাবে, মানুষের কথা ভাবে।) সোহেল আদোও অপরাধী কিনা বা অপরাধ করছে কিনা সেটা প্রমান হবার আগেই তাকে জেল হাজতে কিভাবে ঢুকানো হলো, বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে। এভাবে চলতে থাকলে তো দেশে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে সবার! কিছুই কি করার নেই?

থাকলে প্লিজ বিষয়টি সঠিক ভাবে তদন্ত করে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় হাজির করুন। সবিনয়ে অনুরোধ করছি জনাব মিজানুর রহমান সোহেলকে জেল থেকে মুক্তি দিন, তার বিচারের রায়ের উপর তাকে শাস্তি দিন যদি সে সত্যিকার অপরাধী হয়ে থাকে। সেই সাথে কর্তৃপক্ষকে বিনীত আহ্বান জানাই, তথ্য বিহীন আবেগী না হয়ে তথ্য যুক্ত সত্য খুজে বের করুণ এবং দরকারে সাজা দিন।
বিনীত নিবেদন।

লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন থেকে, [email protected]

 

(লেখাটি লেখকের সম্পূর্ণ নিজস্ব মতামত। ডেইলি নিউ সানের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার ডেইলি নিউ সান নিবে না।)