সরকার তরুণদের দক্ষ কর্মশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে : প্রধানমন্ত্রী

0
109

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে খাপ নেয়ার লক্ষ্যে সক্ষমতা লাভের জন্য তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ কর্মশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ তাঁর কার্যালয়ে (পিএমও) জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) প্রথম বৈঠকে বক্তৃতাকালে বলেন, ‘আমরা প্রথমে চাই আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মকে একটি দক্ষ কর্মশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হোক।’

তিনি বলেন, যুব সমাজকে তাদের নিয়মিত অধ্যয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সাথে পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে, যাতে তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম সমাজে তাদের অবস্থান যথাযথ মর্যাদার সাথে বজায় রাখতে পারে।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

কোন মতে সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য পড়াশোনা না করে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে শুধু কোন মতে ঘষে-মেজে বিএ, এমএ পাস করেই চাকুরীর পেছনে ছুটে বেড়ায়।

তিনি বলেন, তারা যেন স্বপ্রণোদিত হয়। আমাদের দলের পক্ষ থেকে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান সিআরআই উদ্যোগ নিয়েছে এবং তার মাধ্যমে ইয়াং বাংলা সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে উৎসাহিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যে আভাসটা পাচ্ছি, আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না, বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে না, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের জনশক্তিকে আমরা গড়ে তুলতে চাই।

শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে জাতির পিতার ভাষণের উদ্ধৃতি তুলে ধরেন।

জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘শুধু বিএ, এমএ পাশ করে লাভ নেই। আমি চাই কৃষি কলেজ, কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল ও কলেজে যাতে সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বাঁচতে পারবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এমন ব্যবস্থা চাই যাতে আমাদের দেশের যুব সমাজ সুদক্ষ কারিগর হিসেবে গড়ে উঠে এবং দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়েই কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে। যার যে মেধা আছে, দক্ষতা আছে সেটাও যেন বিকশিত হতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার কাজ আমি করে খাবো। আমি চাকুরীর পেছনে ছুটবো না, নতুন চাকুরী দিবো। এভাবেই তাদেরকে কিন্তু আমরা উৎসাহিত করে যাচ্ছি। আমাদের যুব সমাজকে সেটাই অনুধাবন করাতে হবে।

তিনি বলেন, যত বেশি দক্ষ জনশক্তি আমরা গড়তে পারবো আমাদের দেশের কাজেও যেমন লাগবে আবার বিদেশেও লাগবে। আমরা চাই আমাদের দেশটা এগিয়ে যাক।

সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে অনুকূল জনমিতিক সুবিধা ভোগ করছে, যা আগামী ২০৩৩ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। প্রতি বছর ২২ লক্ষ কর্মক্ষম যুবগোষ্ঠী শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছে। কিন্তু শ্রম বাজারে যুক্ত হওয়া যুবশক্তিকে দক্ষ করে গড়ে তোলা সম্ভব না হলে এ জনমিতিক সুবিধাকে জনমিতিক লভ্যাংশে রূপান্তর করা সম্ভব হবে না। তাই এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ‘রূপকল্প ২০৪১’ এ পৌঁছানোর পথ সুগম করতে হবে। সেই পথেই বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়।

বিভিন্ন দেশের শ্রম বাজারে দক্ষ জনশক্তির চাহিদার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক দেশ এখন বয়োবৃদ্ধের দেশে পরিণত হয়ে গেছে। সেখানে আমাদের বড় বিষয় হলো আমাদের বিপুল সংখ্যক যুব শ্রেণি আছে। কাজেই আমরা চাই শ্রম বাজারে যে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে সেই সাথে তারা নিজেদেরকে উপযুক্তভাবে গড়ে তুলবে। শুধু শ্রম বাজার না, শ্রম শিল্প সব দিক থেকেই। আমি মনে করি বিশ্ব একটা গ্লোবাল ভিলেজ, কাজেই সব দিকেই উন্মুক্ত হচ্ছে। সেখানে আমাদের অনেক কর্মী বিদেশে কাজও করে। তাদেরকে আমরা চাই দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে।