চট্টগ্রাম অফিসঃ
চট্টগ্রামে অপহরণের শিকার হয়ে উদ্ধার হওয়া সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার থানায় মামলা করেছেন। আজ বুধবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানায় উপস্থিত হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। তবে মামলায় কারো নাম উল্লেখ্য না করে ৬ জন অজ্ঞাতনামা অপরহরণকারীদের আসামী দেখানো হয়েছে।
নিখোঁজ হওয়ার ৪ দিনের মাথায় গত রবিবার (১ নভেম্বর) রাত পৌনে ৮টায় সীতাকুণ্ডের বড় কুমিরা এলাকায় রাস্তার পাশে তাকে মূমর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এর আগে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে এনে সারওয়ারকে অজ্ঞাতনামারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানসড়কের পার্শ্বে ফেলে যায়। পরে সিএমপির কোতোয়ালী থানা পুলিশ গিয়ে তাকে এনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।
গোলাম সরওয়ার আজকের সূর্যোদয় চট্টগ্রাম ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার এবং অনলাইন পোর্টাল সিটি নিউজ বিডি ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক।
নিউজ করার সুত্র ধরে তাকে অপহরণ হয়েছে বলে জানান তিনি।
মামলা দায়েরের আগে আজ বুধবার দুপুরে কিছুটা সুস্থ হয়ে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যলয়ে এসে গোলাম সারওয়ার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, নিউজ করার ওরা (অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা) আমাকে দফায় দফায় পিটিয়েছে। অনলাইন পোর্টালে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি নিউজ করেছিলাম। এরপর আমার মোবাইলে বেশ কয়েকবার অজ্ঞাত ব্যক্তির ফোন এসেছিল। কেউ যেন বলেছিল, “নিউজটা করে ভালো করোনি”। এসব ফোনকল চেক করা যেতে পারে।
সারওয়ার জানায় গত বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে চন্দনাইশস্থ গ্রামের বাড়ীতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নগরীর আলমাস সিনেমা এলাকা থেকে ভাড়ায় মোটরসাইকেলে উঠি নতুন ব্রীজ এলাকা পর্যন্ত। মোটরসাইকেলটি কিছুদূর যাওয়োর পর ভিআইপি টাউয়ারে সামনে শ্লো করলে একজন যুবক আমার পিছনেে উঠে আমাকে একটি হেলমেড পরিয়ে দেয়। এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে তারা আমাকে কোথাই নিয়ে গেছে আমি জানি না।
দুর্বৃত্তদের অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় মামলা করতে অনিহা প্রকাশ করে সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন নিরাপত্তার ও আর্থিক অস্বচ্ছলতার অভাবে তিনি তাকে অপহরণ ও অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনার জন্য মামলা করতে চান না। তবে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিক নেতাদের অনুরোধে তিনি মামলা করতে নেতৃবৃন্দের সাথে সিএমপির কোতোয়ালী থানায় যান এবং সেখানে বসেই এজাহার লিখেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় গোলাম সাওেয়ারের দেয়া এজাহার মামলা হিসেবে নতিভূক্ত করে পুলিশ।
তবে মামলায় গোলাম সারওয়ার কাউকে আসামী করতে রাজি হয়নি। অজ্ঞাতনামা ৬ জনকে আসামী দেখিয়ে মামলা করা হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালী থানার ওসি মো. মহসীন।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি রতনকান্তি দেবাশীষ জানান, গোলাম সারওয়ার প্রথমে ভয়ে কারো বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি না হলেও পরে সাংবাদিক নেতাদের অভয় দেয়ার কারণে মামলা করতে রাজি হন। আমরা সবাই সারওয়ারকে নিয়ে থানায় মামলা করতে এসেছি।
পুলিশ জানায় গোলাম সােরওয়ার মামলা আর্জিতে তাকে অপহরণের পর অজ্ঞাত দুবৃর্ত্তরা মোবাইলের ইমু নম্বরে তার স্ত্রী কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল। ইমো নাম্বার, বিকাশ নাম্বার ও হুমকি দাতার কল রেকর্ড এক সূত্র ধরে তদন্ত কাজ চলছে বলে জানায় পুলিশ।
মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ বাদী সারওয়ারকে নিয়ে তাকে যে স্থান থেকে অপহরণ করা হয়েছিল সে স্থান কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ার ও আলমাস সিনেমা এলাকা পরিদর্শনে যান।